ঢাকা, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫, ২৬ আষাঢ় ১৪৩২

ভারতে আজানকে শব্দদূষণ বলা হচ্ছে, ১৫০০ মসজিদ থেকে মাইক অপসারণ

বিশ্ব ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ জুলাই ০৬ ১৬:০৮:১১
ভারতে আজানকে শব্দদূষণ বলা হচ্ছে, ১৫০০ মসজিদ থেকে মাইক অপসারণ

নিজস্ব প্রতিবেদক: "আল্লাহু আকবার..." — শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে ভারতের আকাশে প্রতিধ্বনিত হয়ে আসা এই আত্মিক আহ্বান এখন বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে। মুম্বাই শহরে প্রায় ১,৫০০ মসজিদ থেকে লাউডস্পিকার সরিয়ে নেওয়ার ঘটনাকে ঘিরে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে — এটা কি পরিবেশ রক্ষার উদ্যোগ, নাকি সংখ্যালঘু মুসলমানদের ধর্মীয় অধিকারে হস্তক্ষেপ?

পুলিশ প্রশাসনের দাবি, শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণের অংশ হিসেবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তারা জানিয়েছে, সরকার নির্দেশিত নিয়ম অনুযায়ী মসজিদ, মন্দিরসহ বিভিন্ন ধর্মীয় স্থানে অভিযান চালিয়ে মাইক খুলে ফেলা হয়েছে।

তবে মুসলিম সম্প্রদায়ের অভিযোগ, এই অভিযান কার্যত মসজিদগুলোকে লক্ষ্য করেই পরিচালিত হয়েছে। হিন্দু ধর্মীয় অনুষ্ঠান বা পূজামণ্ডপে মাইকের ব্যবহার নিয়ে প্রশাসন সে রকম কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এ থেকেই তারা মনে করছেন, এটি একটি পক্ষপাতমূলক এবং পরিকল্পিত বৈষম্যের বহিঃপ্রকাশ।

কাশ্মীর মিডিয়া সার্ভিসের প্রতিবেদনে বলা হয়, শব্দদূষণ আইনের অপব্যবহার করে মুসলিমদের ধর্মীয় স্বাধীনতায় বাধা দেওয়া হচ্ছে। এর প্রতিবাদে মুসলমানদের একটি প্রতিনিধি দল মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত পাওয়ারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছে এবং পরিষ্কারভাবে জানিয়েছে, এটি ধর্মীয় অধিকারে হস্তক্ষেপ।

মুম্বাই পুলিশ কমিশনার দেবিন ভরাটী জানিয়েছেন, যেসব স্থানে মাইক সরানো হয়েছে, সেখানে তা আর পুনঃস্থাপন করা যাবে না। শুধু বিশেষ ধর্মীয় উৎসবের সময়, সরকারের অনুমতি নিয়ে সীমিত শব্দমাত্রায় ব্যবহার করা যাবে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আজানকে শব্দদূষণ হিসেবে তুলে ধরার এই সিদ্ধান্ত বিজেপির রাজনৈতিক কৌশলের অংশ। এটি ধর্মনিরপেক্ষ ভারতীয় মূল্যবোধের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। মুসলিমদের ধর্মচর্চার স্বাধীনতাকে সংকুচিত করে রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়ার অপচেষ্টা বলেও অনেকে মনে করছেন।

মুম্বাইয়ের মুসলিম সংগঠন ও ধর্মীয় নেতারা এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। শহরের বিভিন্ন এলাকায় আন্দোলনের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রশাসন অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেছে।

এখন প্রশ্ন উঠছে — ভারতের এই পদক্ষেপ কি সত্যিই শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা, নাকি একটি বৃহৎ ধর্মীয় গোষ্ঠীকে নিঃশব্দ করে দেওয়ার এক নীরব প্রচেষ্টা?

সোহাগ/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ