ঢাকা, সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫, ৯ আষাঢ় ১৪৩২

যুক্তরাষ্ট্র-ইরান উত্তেজনায় তেলের বাজারে ঝড়, হু-হু করে বাড়ছে দাম

জাতীয় ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ জুন ২৩ ০৯:১৯:৫৯
যুক্তরাষ্ট্র-ইরান উত্তেজনায় তেলের বাজারে ঝড়, হু-হু করে বাড়ছে দাম

নিজস্ব প্রতিবেদন: যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক হামলা ইরানের একটি পারমাণবিক স্থাপনাকে লক্ষ্য করে চালানোর পর বিশ্ববাজারে নতুন করে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়েছে জ্বালানি তেলের বাজারে। হামলার পরদিনই আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বড় ধরনের উল্লম্ফন করে।

সোমবার (২৩ জুন) বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, মার্কিন স্থানীয় সময় শনিবার সন্ধ্যার হামলার পর রবিবার রাতেই তেলের ফিউচার মার্কেটে বড় উত্থান দেখা যায়।

যুক্তরাষ্ট্রে অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়েছে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ, যা প্রতি ব্যারেলে দাঁড়িয়েছে ৭৬ দশমিক ৪৭ ডলার। অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক মানদণ্ড ব্রেন্ট তেলের দাম ৩ দশমিক ২ শতাংশ বেড়ে পৌঁছেছে ৭৪ দশমিক ৫৯ ডলারে।

তবে শেয়ারবাজারে এর উল্টো প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। ডাও জোনস ফিউচারস সূচক কমেছে ২৫০ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ। এসঅ্যান্ডপি ৫০০ ও নাসডাক ফিউচার সূচকেও একই হারে পতন লক্ষ্য করা গেছে।

এই বাজার অস্থিরতার মধ্যেও ডলারের মান বেড়েছে প্রায় শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, সংকটকালে বিনিয়োগকারীরা সাধারণত ডলারে ঝুঁকে পড়েন। তবে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং সামরিক হস্তক্ষেপের জেরে এই প্রবণতা কতদিন স্থায়ী হবে, তা নিয়ে রয়েছে অনিশ্চয়তা।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইরান ও ইসরায়েলের চলমান উত্তেজনার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি হামলা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। এর ফলে বিশ্ববাজারে জ্বালানি খাতে অনিশ্চয়তা ব্যাপকভাবে বাড়ছে।

এদিকে ইরানের পার্লামেন্ট হরমুজ প্রণালী বন্ধের অনুমোদন দিয়েছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখন দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের হাতে। এই প্রণালী দিয়ে প্রতিদিন বিশ্বের প্রায় ২০ শতাংশ তেল ও গ্যাস সরবরাহ হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি তথ্য প্রশাসনের মতে, হরমুজ প্রণালী বন্ধ হয়ে গেলে বিশ্ব জ্বালানি সরবরাহে বড় ঘাটতি দেখা দিতে পারে। এমনকি উপসাগরীয় অঞ্চলের বাইরের দেশগুলোও তেলের উচ্চ মূল্যের চাপ সামলাতে বাধ্য হবে।

বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ১৯৮০-এর দশকের ইরান-ইরাক যুদ্ধকালেও হরমুজ প্রণালী পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। কারণ এ রুট ছাড়া বিশ্বের সামনে কার্যত কোনো বিকল্প পথ নেই।

বর্তমান পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও জ্বালানি নিরাপত্তার জন্য এক বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে। এখন বিশ্বের নজর ইরান কী সিদ্ধান্ত নেয় তার দিকেই।

সোহাগ/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ