সদ্য সংবাদ
মানবিক করিডর ও নির্বাচন নিয়ে যা বললেন সেনাপ্রধান

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সব সময় সংবিধান মেনে চলে এবং নির্বাচন সম্পর্কেও পূর্বের অবস্থানে অটল রয়েছে বলে জানিয়েছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকারুজ্জামান। তিনি বলেন, দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের সিদ্ধান্ত কেবলমাত্র একটি বৈধ ও নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমেই আসা উচিত।
২১ মে, বুধবার ঢাকা সেনানিবাসে অফিসারস অ্যাড্রেস অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা সরাসরি এবং ভার্চুয়ালি অংশ নেন। সভায় নির্বাচন, মানবিক করিডর, চট্টগ্রাম বন্দর, জাতীয় সংস্কার এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
নির্বাচন প্রসঙ্গে সেনাপ্রধান বলেন, নির্বাচন দেশের গণতান্ত্রিক যাত্রার ভিত্তি। এটি রাজনৈতিক সরকারের অধীনেই পরিচালিত হওয়া উচিত। অতীতের মতো সেনাবাহিনী ভবিষ্যতেও নিরপেক্ষতা বজায় রেখে দায়িত্ব পালন করবে। তিনি আরও বলেন, যে কোনো নির্বাচনী দায়িত্ব সেনাবাহিনী সর্বোচ্চ সততা, নিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে পালন করবে।
রাখাইন রাজ্যে মানবিক করিডর প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব নিয়ে প্রশ্ন করা হলে সেনাপ্রধান স্পষ্ট করে বলেন, এ ধরনের সিদ্ধান্ত কেবলমাত্র একটি নির্বাচিত ও বৈধ সরকারের মাধ্যমেই আসা উচিত। জাতীয় স্বার্থে কোনো আপস চলবে না। উদ্যোগ নিতে হলে তা হতে হবে রাজনৈতিক ঐকমত্য ও সংবিধান সম্মত কাঠামোর ভেতরে।
চট্টগ্রামের নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল পরিচালনার দায়িত্ব বিদেশি প্রতিষ্ঠানের হাতে দেওয়ার বিষয়েও নিজের মতামত তুলে ধরেন সেনাপ্রধান। তিনি বলেন, এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে স্থানীয় জনগণ এবং রাজনৈতিক নেতৃত্বের মতামত বিবেচনায় নেওয়া আবশ্যক। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত অবশ্যই রাজনৈতিক সরকারের মাধ্যমেই নেওয়া উচিত।
জাতীয় সংস্কার কার্যক্রম নিয়ে সেনাপ্রধান বলেন, এই বিষয়ে তার সঙ্গে কোনো পূর্ব পরামর্শ করা হয়নি এবং তিনি জানেন না কী ধরনের সংস্কার হচ্ছে বা তা কীভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে।
মব ভায়োলেন্স বা সংঘবদ্ধ জনতার সহিংসতা বিষয়ে কঠোর অবস্থান জানিয়ে তিনি বলেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সেনাবাহিনী এখন আরও কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে। জনতার নামে সংঘটিত সহিংসতা কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না।
আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে সেনাপ্রধান নির্দেশ দেন, জনগণ যেন নিরাপদ ও আনন্দঘন পরিবেশে ঈদ উদযাপন করতে পারে, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় সহায়তা নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কখনো এমন কোনো কার্যক্রমে অংশ নেবে না, যা জাতীয় স্বার্থ বা দেশের সার্বভৌমত্বের পরিপন্থী। নির্বাচনকালীন সময়ে সেনাবাহিনী পেশাদারিত্ব বজায় রেখে নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করবে এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ণ সহায়তা দেবে।