ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫, ২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

কবর থেকে এসে ভোট দেন ২০ লাখ ব্যক্তি!

জাতীয় ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ মে ১৬ ১২:১৫:২৯
কবর থেকে এসে ভোট দেন ২০ লাখ ব্যক্তি!

নিজস্ব প্রতিবেদক; বাংলাদেশের ভোটার তালিকায় এমন এক বিস্ময়কর তথ্য উঠে এসেছে, যা শুনে অনেকেই হতবাক। গত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রায় ২০ লাখ মৃত ব্যক্তি 'জীবিত' ভোটার হিসেবে তালিকাভুক্ত ছিলেন। এমন তথ্য দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসিরউদ্দিন।

তিনি বলেন, আমাদের ভোটার তালিকায় মৃতদের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বেশি। ২০ লাখেরও বেশি মৃত মানুষের নাম এখনও তালিকায় রয়েছে। নির্বাচন কমিশন এখন মৃতদের বাদ দেওয়ার কাজ শুরু করেছে।

ভোটার তালিকা হালনাগাদে আবারও ঘরে ঘরে গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করছে নির্বাচন কমিশন। ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এই কার্যক্রমে এখন পর্যন্ত প্রায় ৬০ লাখ নাগরিক তথ্য দিয়েছেন।

নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, ২৩ মার্চ পর্যন্ত প্রায় ৫০ লাখ নতুন নিবন্ধন সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে ১২ লাখ ৮৮ হাজার নতুন ভোটার এবং পূর্বে বাদ পড়া প্রায় ৩৬ লাখ ভোটার রয়েছেন।

ইসির আশা, এই হালনাগাদ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে একটি নির্ভুল ও আধুনিক ভোটার তালিকা তৈরি হবে, যা আগামীর নির্বাচনকে আরও অংশগ্রহণমূলক ও স্বচ্ছ করতে সাহায্য করবে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিগত দশম ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন একতরফা ছিল, যেখানে প্রধান বিরোধী দলগুলো অংশ নেয়নি। ফলে ভোটার উপস্থিতি ছিল অনেক কম। যদিও নির্বাচন কমিশন দাবি করেছে ৪০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে, বাস্তব চিত্র ছিল ভিন্ন—বহু কেন্দ্রে ভোটারই ছিল না বলে অভিযোগ ওঠে।

একাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে অভিযোগ ছিল আরও গুরুতর। ভোটের আগের রাতে অনেক কেন্দ্রে ব্যালট বাক্স পূরণ করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। অনেক ভোটার ভোটকেন্দ্রে না গিয়ে জানতে পারেন, তাদের নামে আগেই ভোট দেওয়া হয়েছে। অথচ সেই নির্বাচনে সরকারিভাবে ভোটার উপস্থিতি দেখানো হয় ৮০ শতাংশের বেশি।

বর্তমানে দেশে মোট ভোটারের সংখ্যা প্রায় ১২ কোটি ৫০ লাখ। নবম সংসদ নির্বাচনের পর থেকে এই তালিকায় যুক্ত হয়েছে প্রায় ৪ কোটি ৫০ লাখ নতুন ভোটার। তাদের মধ্যে বড় একটি অংশ এবারই প্রথমবারের মতো ভোট দেবেন।

নির্বাচন কমিশন বলছে, হালনাগাদ তালিকা ও একটি সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করে ভোটারদের আস্থা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে।

নির্বাচন বিশ্লেষক ড. তোফায়েল আহমেদ মনে করেন, বিগত নির্বাচনগুলো ঘিরে যে অবিশ্বাস তৈরি হয়েছিল, তা কাটাতে কমিশনের নেওয়া নতুন উদ্যোগগুলো উৎসাহব্যঞ্জক। অংশগ্রহণমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য একটি নির্বাচনের প্রত্যাশা করা যেতে পারে।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ