ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫, ৫ আষাঢ় ১৪৩২

ড. ইউনূসের মাস্টারস্ট্রোকে চাপে ভারত

জাতীয় ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ এপ্রিল ২৫ ২১:৪৮:৪১
ড. ইউনূসের মাস্টারস্ট্রোকে চাপে ভারত

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একের পর এক কৌশলগত সিদ্ধান্তে দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতিতে নতুন তরঙ্গ সৃষ্টি হয়েছে। সর্বশেষ, মুহুরী নদীর তীরে প্রতিরক্ষামূলক বাঁধ নির্মাণ নিয়ে প্রতিবেশী ভারত, বিশেষ করে ত্রিপুরা রাজ্যে তৈরি হয়েছে স্পষ্ট উদ্বেগ ও উত্তেজনা।

গত বছর হঠাৎ করে ত্রিপুরার জলাধার থেকে পানি ছেড়ে দেওয়ার ফলে বাংলাদেশের নোয়াখালী ও কুমিল্লা অঞ্চলে ভয়াবহ আকস্মিক বন্যা দেখা দেয়। ক্ষতিগ্রস্ত হন লক্ষাধিক মানুষ, আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ শত কোটি টাকারও বেশি। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মুহুরী নদীর তীরে একটি শক্তিশালী প্রতিরক্ষামূলক বাঁধ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ঢাকার ভাষ্য, এই বাঁধ সম্পূর্ণভাবে বাংলাদেশের জনগণকে রক্ষার জন্য নেওয়া হয়েছে এবং এটি একটি নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা ছাড়া আর কিছু নয়। কিন্তু ভারতের পক্ষ থেকে বিষয়টিকে দেখা হচ্ছে আরও গভীরভাবে—একটি কূটনৈতিক সংকেত হিসেবেও।

ত্রিপুরা সরকার ইতিমধ্যেই সীমান্তে উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছে। এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, দক্ষিণ ত্রিপুরার সীমান্তবর্তী এলাকায় উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। কেউ কেউ এটিকে কেবল একটি বাঁধ নয়, বরং বাংলাদেশের শক্তিশালী বার্তা হিসেবে দেখছেন।

ত্রিপুরার জলসম্পদ দফতরের সচিব কিরণ গিত্তে জানান, “আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছি এবং প্রয়োজনীয় প্রতিরক্ষা প্রস্তুতি নিচ্ছি।”

বিশ্লেষকরা বলছেন, ড. ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ একদিকে যেমন আত্মনির্ভরশীলতার পথে এগোচ্ছে, তেমনি পররাষ্ট্রনীতিতেও দেখাচ্ছে ভারসাম্য ও দৃঢ়তা। পূর্ববর্তী সরকারের সময় ভারতের প্রতি অতিরিক্ত নির্ভরতার যে অভিযোগ ছিল, সেখান থেকে সরে এসে নতুন সরকার এখন নিজেদের স্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. রাশেদুল করিম বলেন, “বাংলাদেশ এখন আর কেবল প্রতিক্রিয়াশীল নয়, বরং পূর্বপ্রস্তুতিমূলক এবং কৌশলগত কূটনীতিতে এগিয়ে যাচ্ছে—যা একটি পরিণত রাষ্ট্রের পরিচয়।”

বাংলাদেশ একটি নদীমাতৃক দেশ। নদী-সম্পদ ব্যবস্থাপনায় আঞ্চলিক সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সেই সহযোগিতা হতে হবে সমতা ও পারস্পরিক সম্মানের ভিত্তিতে। অন্যথায়, এমন প্রতিরক্ষামূলক প্রকল্পগুলো আরও বড় কূটনৈতিক জটিলতার সৃষ্টি করতে পারে।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ