ঢাকা, রবিবার, ১৭ আগস্ট ২০২৫, ২ ভাদ্র ১৪৩২

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মেয়াদ পাঁচ বছর বাড়ানোর দাবিতে আমরণ অনশন

জাতীয় ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ এপ্রিল ১৮ ১৯:৫০:০৫
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মেয়াদ পাঁচ বছর বাড়ানোর দাবিতে আমরণ অনশন

নিজস্ব প্রতিবেদক: নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে দেশে গঠিত হয়েছে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের চাপে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তিন দিন ধরে দেশ ছিল সরকারবিহীন। ৮ আগস্ট, ড. ইউনূসসহ ১৭ সদস্যের অন্তর্বর্তী সরকারের ১৪ সদস্য শপথ গ্রহণ করেন। এরপর রাষ্ট্র সংস্কারসহ বিভিন্ন বিষয় সামনে আসে এবং তাদের কাজ শুরু হয়।

সম্প্রতি, ড. ইউনূসের কাছ থেকে সরকারের মেয়াদ পাঁচ বছর বাড়ানোর দাবি উঠেছে। এ বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন আলোচনা চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে "মার্চ ফর ইউনূস স্যার" ব্যানারে একদল যুবক অনশনে বসেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, ড. ইউনূসের সরকারের মেয়াদ পাঁচ বছর বাড়ানোর দাবিতে রাজু ভাস্কর্যের সামনে একদল যুবক অনশন শুরু করেছেন। তারা জানিয়েছে, প্রয়োজনে তারা আমরণ অনশনে বসতে প্রস্তুত। তাদের মাথার উপরে আরেকটি ব্যানার ঝুলছিল, যেখানে লেখা ছিল— "আগে সংস্কার, পরে নির্বাচন; আগে জনতা, পরে ক্ষমতা।" ব্যানারের নিচে, তারা অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ পাঁচ বছর বাড়ানোর দাবির সাথে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ দাবি তুলে ধরেছেন।

এই পাঁচটি দাবি হলো:

১. ২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে গণহত্যাকারীদের বিচার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে। ২. রাষ্ট্র সংস্কারের প্রক্রিয়া আগামী পাঁচ বছর ধরে চলবে, তারপর হবে নির্বাচন। ৩. প্রথমে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হবে, পরে জাতীয় নির্বাচন। ৪. প্রশাসন থেকে ফ্যাসিস্টদের দোসরদের দ্রুত অপসারণ করে যোগ্য লোক নিয়োগ করতে হবে। ৫. নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা ন্যূনতম স্নাতক হতে হবে।

অনশনে অংশ নেওয়া এক যুবক বলেন, "আমরা চাই ড. ইউনূস স্যারের নেতৃত্বে পরবর্তী পাঁচ বছরে রাষ্ট্রের সব সংস্কার সম্পন্ন হোক। তার অধীনে সংস্কার ছাড়া কিছুই সম্ভব নয়। আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো জনগণের আস্থা অর্জন করতে পারেনি। ২৪ জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আমরা অনেক প্রাণ হারিয়েছি। এসবের বিচার শুধুমাত্র ড. ইউনূসই করতে পারেন।"

নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে আরেক যুবক মন্তব্য করেন, "যারা নির্বাচনে অংশ নেয়, তাদের অধিকাংশই নিজের নাম লিখতে পারেন না। তারা ক্ষমতায় এসে এমপি হয়ে যান। শিক্ষিত প্রতিনিধিরাই দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবেন।"

জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সমন্বয়ক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম ২৯ মার্চ তার ফেসবুকে লিখেছিলেন, "প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মতো একজন রাষ্ট্রনায়ককে পাঁচ বছরের জন্য বাংলাদেশের নির্বাচিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা আমার আজীবন থাকবে।"

এই স্ট্যাটাসের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৩৭ হাজারের বেশি মন্তব্য আসে। সেখানে বিভিন্ন ব্যক্তি নানা প্রতিক্রিয়া জানান। অনেকেই সারজিসের সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন, আবার অনেকে তার বিরোধিতা করেছেন। কিছু মন্তব্যে বলা হয়েছে, "মুহাম্মদ ইউনূসের মতো একজন নোবেলজয়ী বাংলাদেশীকে দেশের উন্নয়নে কাজে লাগানো যেত, কিন্তু অতীতের সরকার তা করেনি। বরং তাকে অপমান করা হয়েছে।"

সোহাগ/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ