ঢাকা, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ট্রান্সশিপমেন্ট ইস্যুতে ভারত-বাংলাদেশ উত্তেজনা

জাতীয় ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ এপ্রিল ১১ ২০:৪৯:৪৪
ট্রান্সশিপমেন্ট ইস্যুতে ভারত-বাংলাদেশ উত্তেজনা

নিজস্ব প্রতিবেদক: পণ্যজটের অজুহাত দেখিয়ে গত ৮ এপ্রিল হঠাৎ করেই ভারত তার ভূখণ্ড ব্যবহার করে বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানির ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বন্ধ করে দেয়। বিশ্লেষকদের মতে, এ সিদ্ধান্ত কেবল বাণিজ্যিক নয়, বরং এর পেছনে রয়েছে কূটনৈতিক বার্তা।

ঘটনাটির সময়টাও ছিল তাৎপর্যপূর্ণ—ঠিক তখনই ঢাকায় চলছিল আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সম্মেলন, যেখানে বাংলাদেশ নিজেকে দক্ষিণ এশিয়ার ভবিষ্যৎ বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে উপস্থাপন করছিল। ৭-১০ এপ্রিলের এ সম্মেলনে ২০০-এর বেশি বিদেশি বিনিয়োগকারী উপস্থিত ছিলেন।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মোদি সরকারের এ পদক্ষেপ আসলে বাংলাদেশকে সতর্ক করে দেওয়ার একটি প্রচ্ছন্ন চেষ্টাও হতে পারে—“ভারতের ছায়া থেকে বেশি দূরে যেও না।”

তবে ভারত দাবি করেছে, এই সিদ্ধান্ত নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যে প্রভাব ফেলবে না। কিন্তু বাস্তবে এর প্রভাব ভারতের উপরেই বেশি পড়বে বলে মনে করছেন অনেকে। কারণ, বাংলাদেশের ট্রান্সশিপমেন্ট ব্যবস্থার মাধ্যমে ভারতের যেসব বন্দর ও বিমানবন্দর রাজস্ব পেত, সেসব আয় এখন বন্ধ হয়ে যাবে।

এর জবাবে বাংলাদেশও দ্রুত কৌশলগত ব্যবস্থা নিয়েছে। বাণিজ্য উপদেষ্টা জানিয়েছেন, ভারত-নির্ভরতা কাটিয়ে চট্টগ্রাম ও পায়রা বন্দরের মাধ্যমে বিকল্প রুট গড়ে তোলা হচ্ছে। একই সঙ্গে আকাশপথেও রপ্তানির সক্ষমতা বাড়ানো হচ্ছে।

বাংলাদেশ এখন চীন, তুরস্ক, পাকিস্তান ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদারে মনোযোগ দিচ্ছে। এমনকি অন্তর্বর্তী সরকারের সময় পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের দ্বারও আবার খুলে গেছে।

বিশ্লেষকদের মতে, ভারত হয়তো ভেবেছিল ট্রান্সশিপমেন্ট বন্ধ করে বাংলাদেশকে চাপে ফেলবে। বাস্তবে ঘটেছে ঠিক উল্টোটা। বাংলাদেশ এখন আর আগের মতো নির্ভরশীল নয়, বরং পরিণত হয়েছে একটি আত্মনির্ভরশীল ও কৌশলী দেশ হিসেবে।

এখন দেখার বিষয়—মোদি সরকারের সিদ্ধান্তের জবাবে বাংলাদেশ আরও কীভাবে এগিয়ে যায়।

সোহাগ/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ