ঢাকা, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ড. ইউনূসের ৫ মাসের সরকার নিয়ে সাধারণ মানুষের ভাবনা—প্রশংসা, প্রশ্ন ও প্রত্যাশা

জাতীয় ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ এপ্রিল ১০ ১৪:৪৩:০৩
ড. ইউনূসের ৫ মাসের সরকার নিয়ে সাধারণ মানুষের ভাবনা—প্রশংসা, প্রশ্ন ও প্রত্যাশা

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পাঁচ মাস প্রায় শেষের পথে। রাজনীতি, অর্থনীতি ও প্রশাসনে বড় ধরনের রদবদলের মধ্য দিয়ে যাওয়া এই সময়টিকে মানুষ কিভাবে দেখছে? মতামত বিভক্ত—কেউ দেখছেন স্বস্তির আবহ, কেউ করছেন ভরসা, আর কেউ তুলছেন গণতন্ত্র ও প্রতিনিধিত্ব নিয়ে প্রশ্ন।

রাজধানী থেকে মফস্বল, বাজার থেকে বাসা—একটি সাধারণ বার্তা অনেকের মুখে: এখন যেন সবকিছু কিছুটা স্থির। এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বলেন, “আগে চাল, ডাল কিনতে গেলে ভয় লাগত। এখন একটু স্বস্তিতে আছি। ইউনূস সাহেব ভালোভাবে সামলাচ্ছেন।”

এক নারী শিক্ষিকার ভাষ্য: “এবারের রমজানটা অনেক শান্তিতে গেল। রাস্তায় ভোগান্তি কম, ছেলেমেয়েদের নিয়ে নিশ্চিন্তে চলাফেরা করেছি।”

তবে সবাই একমত নন। অনেকেই বলছেন, নির্বাচনের মধ্য দিয়ে না এলে কোনো সরকারই স্থায়ী সমর্থন পায় না।

এক তরুণ বলেন, “ভোট ছাড়া কেউ টিকতে পারে না। আমাদের অধিকার, আমাদের সিদ্ধান্ত—তাই যেই আসুক, ভোটে আসুক।”

এক প্রবীণ কৃষকের মন্তব্য: “আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াত—কে আসবে সেটা বড় কথা না। আমরা চাই শান্তিপূর্ণ নির্বাচন। এই রকম স্থিতিশীলতা যদি ভোটের মাধ্যমেই আসত, তবেই ভালো লাগত।”

ড. ইউনূসের শান্ত ও প্রশাসনিক কৌশলের জন্য কেউ কেউ তাকে প্রশংসা করছেন। এক ব্যাংক কর্মকর্তা বলেন: “দেখুন, এই ক'মাসেই ঋণ শোধে অগ্রগতি হয়েছে। দেশের ভাবমূর্তি কিছুটা ফিরেছে—এটা ছোট কথা নয়।”

এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী বলেন: “তিনি রাজনীতিবিদ না বলেই বিশ্বাসযোগ্য। সততা থাকলে অনেক কিছু সম্ভব—ড. ইউনূস তার প্রমাণ দিচ্ছেন।”

যেখানে নেতৃত্ব আছে, সেখানে আবার স্থানীয় পর্যায়ে অনেকে বঞ্চিত।

এক হতাশাগ্রস্ত নারী বলেন: “আমার প্রতিবন্ধী ছেলে। ইউনিয়ন অফিসে ঘুরি, ভাতা পাই না। চেয়ারম্যান নেই, অফিস বন্ধ। আমরা যাব কোথায়?”

কারও মতে, এই জাতিকে বদলাতে হলে দরকার ইসলামী শাসন। এক প্রবীণ হুজুর বলেন: “ইসলামি শাসনের মধ্যেই সঠিক সুশাসনের উপায় আছে। দুর্নীতি, অন্যায়—সবকিছুর সমাধান সেখানেই।”

অন্যদিকে এক শিক্ষার্থীর অভিমত: “ড. ইউনূস চাইলে রাজনৈতিক দল গঠন করে ভোটে আসতে পারেন। আমরা তাকে ভোট দিতে পারব। আপাতত তিনি হাল ধরেছেন, ভবিষ্যতে রাজনীতির জন্য প্রস্তুতিও নিতে পারেন।”

আজকের বাংলাদেশের মানুষ মূলত শান্তি চায়, স্থিতিশীলতা চায়, এবং সবচেয়ে বড় কথা—চায় জবাবদিহিমূলক নেতৃত্ব। ড. ইউনূসের সরকার থাকা উচিত কি না, সেটা নিয়ে মতভেদ থাকলেও একটা বিষয় পরিষ্কার—মানুষ এখন অনেক বেশি সচেতন, তারা পরিবর্তন চায়, তারা চায় ভালো থাকা।

– সোহাগ/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ