ঢাকা, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

হেলিকপ্টারে আছিয়ার নিথর দেহ, শোকে স্তব্ধ মাগুরা

জাতীয় ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ মার্চ ১৩ ২২:৫৪:২৪
হেলিকপ্টারে আছিয়ার নিথর দেহ, শোকে স্তব্ধ মাগুরা

মাগুরার ছোট্ট শিশু আছিয়া, যার ফেরার কথা ছিল হাসিমুখে, রঙিন পোশাকে, আনন্দ নিয়ে। কিন্তু সে ফিরল নিথর দেহে, কাফনের সাদা কাপড়ে মোড়ানো এক নিঃসঙ্গ যাত্রী হয়ে। যে শিশুর জন্য দেশবাসী সুস্থতার প্রার্থনা করেছিল, সেই শিশুই ফিরল নির্মম বাস্তবতার সাক্ষী হয়ে।

বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ছয়টার দিকে একটি হেলিকপ্টার মাগুরার আকাশে দেখা যায়, বুকভরা হাহাকার আর কষ্ট নিয়ে সেই হেলিকপ্টারে আছিয়ার নিথর দেহ পৌঁছায় মাগুরা স্টেডিয়ামে। মুহূর্তেই সেখানে ঢল নামে হাজারো মানুষের, যারা শেষবারের মতো তাকে দেখতে এসেছিল। কান্না, শোক, ক্ষোভ—সব মিলিয়ে এক হৃদয়বিদারক পরিবেশ তৈরি হয়।

নোমানী মাঠে আছিয়ার প্রথম জানাজায় অংশ নেয় হাজারো মানুষ। চারদিকে নিস্তব্ধতা, বুকচাপা কান্না, আর চোখের জলে বিদায়ের মুহূর্ত। এরপর তাকে নেওয়া হয় তার গ্রামের বাড়ি জারিয়ায়, যেখানে দ্বিতীয় জানাজা শেষে সোনাইকুণ্ডি সম্মিলিত ঈদগাহ কবরস্থানে দাফন করা হয়।

পরিবার, স্বজন, প্রতিবেশী—সবাই যেন বাস্তবতাকে মেনে নিতে পারছিল না। যে ঘরের মেয়ে একদিন রঙিন জামা পরে খেলে বেড়াত, সে আজ শুয়ে আছে মাটির নিচে, কাফনের সাদা কাপড়ে মোড়ানো।

আছিয়ার মরদেহ যখন তার বাড়িতে পৌঁছায়, তখন শুধু শোকই নয়, মানুষের মনে জন্ম নেয় প্রবল ক্ষোভ। বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী ধর্ষকের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়, যেন সেই পাপের চিহ্নটুকুও নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়।

সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অভিযুক্তদের সবাই গ্রেপ্তার হয়েছে এবং ৯০ দিনের মধ্যে বিচার সম্পন্ন করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মৎস ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার ও জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন এবং কঠোর শাস্তির আশ্বাস দেন।

কিন্তু শুধু শাস্তি কি আছিয়ার মতো আরেকটি শিশুকে রক্ষা করতে পারবে? সমাজ কি আরেকটি নিষ্পাপ প্রাণকে এভাবে অকালে ঝরে যেতে দেবে? এই প্রশ্ন আজ পুরো জাতির সামনে। আছিয়া চলে গেছে, কিন্তু তার চলে যাওয়ার যন্ত্রণা, সমাজের ব্যর্থতার ইতিহাস, আর বিচারের দাবির সেই তীব্র প্রতিধ্বনি থেকে যাবে অনেকদিন...

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ