সদ্য সংবাদ
মুক্তিযুদ্ধের সময়ে আওয়ামী লীগ-ভারত গোপন চুক্তিতে কি ছিল

নিজস্ব প্রতিবেদক: ১৯৭১ সালের অক্টোবর মাসে, ভারত সরকারের সাথে প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে একটি গোপন সাত দফা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যা ছিল প্রশাসনিক, সামরিক, বাণিজ্যিক, পররাষ্ট্র এবং প্রতিরক্ষা বিষয়ক। এই চুক্তির বিষয়ে ধারণা পাওয়া যায় মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাষানীর সাপ্তাহিক "হক কথা", অলি আহাদের "জাতীয় রাজনীতি ১৯৪৫ থেকে ৭৫", এবং মোহাম্মদ নুরুল কাদিরের "২৬৬ দিনের স্বাধীনতা" গ্রন্থের মাধ্যমে।
"হক কথা"-তে মাওলানা ভাষানী উল্লেখ করেছেন যে, তাজউদ্দিন আহমদের প্রধানমন্ত্রীত্বের সময় ভারত বাংলাদেশের সাথে গোপনে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত করেছে, যা পরবর্তীতে বাংলাদেশের জনগণের জন্য নানা সমস্যার সৃষ্টি করেছিল। তাজউদ্দিন কলকাতায় এক বক্তৃতায় ভারতের নেতৃত্বকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেছিলেন যে, কিছু কিছু বিষয় নিয়ে বাংলাদেশকে ভুলভাবে দেখা উচিত নয়।
এছাড়া, "হক কথা"-তে বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত যে সহায়তা দিয়েছিল, তা পরবর্তীতে পরিশোধের শর্তে ছিল। চুক্তি অনুযায়ী, ইন্দিরা গান্ধীর ঢাকায় সফরের সময় অষ্টম চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যেখানে শেখ মুজিবুর রহমান স্বাক্ষর করেন। এই চুক্তির শর্ত বিশ্লেষণ করলে, এটি একটি সামরিক ও অধীনতামূলক মিত্রতা চুক্তি হিসেবে দেখা যায়।
"জাতীয় রাজনীতি ১৯৪৫ থেকে ৭৫" গ্রন্থে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন এই চুক্তির বিভিন্ন দিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। প্রশাসনিক চুক্তিতে বলা হয়েছিল, যারা মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন, তারা প্রশাসনিক পদে নিয়োজিত থাকতে পারবেন, এবং বাকিদের জায়গা পূরণ করবেন ভারতীয় প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।
সামরিক চুক্তি অনুযায়ী, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর প্রাথমিকভাবে ভারতীয় সৈন্যরা বাংলাদেশে অবস্থান করবে। ১৯৭২ সালের নভেম্বর থেকে প্রতিবছর এই বিষয়ে পূর্ণ নিরীক্ষণের জন্য দু'দেশের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া, বাংলাদেশের নিজস্ব সামরিক বাহিনী থাকবে না, এবং মুক্তিবাহিনীকে কেন্দ্র করে একটি প্যারামিলিশিয়া বাহিনী গঠন করা হবে।
চুক্তির মধ্যে ভারত-পাকিস্তান সর্বাত্মক যুদ্ধের সম্ভাবনা নিয়ে বলা হয়েছিল, ভারতীয় সেনাবাহিনীই এই যুদ্ধে নেতৃত্ব দেবে এবং মুক্তিবাহিনী ভারতীয় বাহিনীর অধীনে থাকবে। বাণিজ্য বিষয়ক চুক্তিতে উল্লেখ ছিল, দু'দেশের বাণিজ্য খোলা বাজার ভিত্তিতে চলবে, তবে বাণিজ্যের হিসাব বছরে ভিত্তি করে হবে এবং স্টারলিংতে পরিশোধ করা হবে।
পররাষ্ট্র বিষয়ক চুক্তিতে বলা হয়েছিল, বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিষয়ে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করবে এবং যতদূর সম্ভব ভারত বাংলাদেশকে সহায়তা করবে। বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা দায়িত্বভারও ভারত গ্রহণ করবে।
সম্প্রতি, ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ কিছু বইয়ের রেফারেন্সের মাধ্যমে এই চুক্তির বিষয়ে আলোচনা উত্থাপন করেছেন। এসব চুক্তির শর্ত বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
সোহাগ/
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- দুই দিনের ছুটি বাতিল, খোলা থাকবে সব সরকার প্রতিষ্ঠান
- বাংলা ৬ সিনেমায় বাস্তবেই সহবাস করতে হয়েছে নায়ক-নায়িকার
- স্ত্রী-মাকে নিয়ে দ্বন্দ্ব, আত্মহত্যার আগে যা লিখলেন এএসপি পলাশ
- চিরকুটে ফাঁস করলেন দুঃখের গল্প, ভাই জানালেন আসল কারণ
- পাল্টা হামলায় কত সেনা হারাল ভারত, অবশেষে তথ্য দিল দিল্লি
- আব্দুস সাত্তার ও মেয়ে শেফা– আলোচিত ঘটনার নেপথ্যে উঠে এলো নতুন তথ্য
- আবদুল হামিদের বিদেশযাত্রা নিয়ে ইমিগ্রেশনের ব্যাখ্যা— বিতর্কের ঝড় দেশজুড়ে
- বাংলাদেশকে চিঠি দিয়ে যা জানালো আমেরিকা
- ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’ আসছে, সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে বাংলাদেশের যে অঞ্চল
- পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় কাঁপলো ভারতের ১৫ শহর
- একই বিছানায় দুই স্ত্রী নিয়ে ঘুমানো কি ইসলামসম্মত
- বাংলাদেশে ঈদুল আজহার তারিখ ঘোষণা : কতদিন সরকারি ছুটি থাকবে
- শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ইতিহাসে প্রথম তদন্ত সম্পন্ন
- দুই প্রতিবেশীর দ্বন্দ্বে বাংলাদেশের স্পষ্ট বার্তা: ‘সংযম দেখান’
- আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার পর যা বলছে ভারত