এইমাত্র পাওয়া: এক ডাকে লাখ লাখ মানুষ, স্লোগানে, স্লোগানে,উত্তাল ঢাকা

‘মার্চ ফর ইউনিটি’ কর্মসূচির মাধ্যমে মঙ্গলবার ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার পরিণত হয় প্রতিবাদ ও ঐক্যের মঞ্চে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বানে হাজারো ছাত্র-জনতা স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে স্লোগানে মুখরিত করে তোলে সমাবেশস্থল। শেখ হাসিনা ও তার সরকারের বিরুদ্ধে জুলাই-আগস্ট গণহত্যার অভিযোগ তুলে ফাঁসির দাবিতে সোচ্চার হন আন্দোলনকারীরা।

সকাল থেকেই শহীদ মিনার চত্বরে মিছিল নিয়ে জড়ো হতে থাকেন ছাত্র-জনতা। ঢাকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি যোগ দেন দেশজুড়ে ছড়িয়ে থাকা আন্দোলনের কর্মী ও সমর্থকরা। মিছিলের কণ্ঠে ভেসে আসে:

“আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে”

“গোলামি না আজাদি, আজাদি-আজাদি”

“দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ”।

তথ্যচিত্র প্রদর্শন ও প্রতিবাদের গতি বৃদ্ধি

বিকাল তিনটায় সমাবেশের শুরুতেই এক তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়, যেখানে তুলে ধরা হয় শেখ হাসিনা সরকারের সময়ের দমন-পীড়ন, দুর্নীতি ও নিপীড়নের চিত্র। এরপর স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে শহীদ মিনার চত্বর।

সমাবেশে বিকাল চারটায় এক মিনিট নীরবতা পালনের মাধ্যমে জুলাই-আগস্টে শহীদদের স্মরণ করা হয়। এরপর শহীদ শাহরিয়ার হাসান আলভীর বাবা আবুল হাসান বক্তব্য রাখেন। তার আবেগঘন কণ্ঠে উঠে আসে শহীদ সন্তান হারানোর যন্ত্রণা।“আমার ছেলে শাহরিয়ারকে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। খুনি হাসিনা ও তার বাহিনীকে এর জবাব দিতে হবে। আমরা তার ফাঁসি চাই।”

সমাবেশে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছিল পরিবর্তনের দৃঢ় প্রত্যয়। ডেমরা থেকে আসা কলেজ শিক্ষার্থী আসিফ মাহতাব বলেন,“আমাদের লক্ষ্য মুজিববাদী সংবিধানের অবসান। আজকের সমাবেশ সেই পরিবর্তনের ভিত্তি তৈরি করবে।”

মিরপুর থেকে আসা শিক্ষার্থী শাকিল হোসেন বলেন,

“আমরা নতুন এক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি, যেখানে বৈষম্য থাকবে না। আজকের সমাবেশ সেই বাংলাদেশ গড়ার প্রথম ধাপ।”

‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ নিয়ে গত দুদিন ধরে চলছে নানা জল্পনা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দাবি করেছে, এই ঘোষণাপত্রের আলোকে আওয়ামী লীগকে অপ্রাসঙ্গিক ঘোষণা করা হবে।

সমাবেশকে ঘিরে শহীদ মিনার এলাকায় মোতায়েন করা হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য। পুলিশের পাশাপাশি ডগ স্কোয়াড, র‌্যাব ও ডিবির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

‘মার্চ ফর ইউনিটি’ কর্মসূচি দেশের নানা প্রান্তের মানুষের প্রতিবাদের ভাষা একত্রিত করেছে। স্লোগানে, স্মরণে, ও বক্তব্যে উঠে এসেছে স্বাধীন, বৈষম্যমুক্ত, ও গণতান্ত্রিক এক নতুন বাংলাদেশের প্রত্যাশা। শহীদ মিনারের মঞ্চ থেকে সেই বার্তা ছড়িয়ে পড়েছে দেশের আনাচে-কানাচে।