ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৩ জুলাই ২০২৫, ১৯ আষাঢ় ১৪৩২

ভারত কি ভাঙনের পথে! সত্যি হতে চলেছে ওবামার সতর্কবার্তা

বিশ্ব ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ জুলাই ০৩ ২০:৫৮:৫০
ভারত কি ভাঙনের পথে! সত্যি হতে চলেছে ওবামার সতর্কবার্তা

নিজস্ব প্রতিবেদক: ২০২৩ সালের এক ঝলমলে সন্ধ্যায়, ওয়াশিংটনের হোয়াইট হাউসে আলোকসজ্জায় সজ্জিত এক রাষ্ট্রীয় নৈশভোজ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমন্ত্রণে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। করতালি, উষ্ণ অভ্যর্থনা আর মোদির চেনা হাসি—সব মিলে এক নিখুঁত কূটনৈতিক সৌহার্দ্যের ছবি।

কিন্তু এই বাহ্যিক সৌহার্দ্যের আড়ালে ঠিক সেদিনই জন্ম নেয় আরেকটি গল্প। কয়েক হাজার মাইল দূরে, এক সাক্ষাৎকারে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেন এমন এক কথা, যা কেবল কূটনৈতিক মহল নয়, নাড়িয়ে দেয় গোটা বিশ্ব মিডিয়াকে।

তিনি বলেন, “ভারতে যদি মুসলিম সংখ্যালঘুদের অধিকার নিশ্চিত না করা হয়, তবে একদিন এই দেশ টুকরো টুকরো হয়ে যাবে।”

এই একটি বাক্য যেন থমকে দেয় উপমহাদেশের রাজনীতি। ওবামা কেবল প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট নন, তিনি মোদিকে ব্যক্তিগতভাবে চেনেন, একাধিকবার মুখোমুখি হয়েছেন। তাই তার এই বক্তব্য নিছক মতামত নয়, বরং ভবিষ্যৎ নিয়ে এক গভীর সতর্কবার্তা।

তিনি আরও বলেন, “আমি যদি মোদির সামনে বসতাম, তাকে সরাসরি বলতাম—সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষা করুন, নইলে ভারতের ঐক্য ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে।”

হোয়াইট হাউসে বাইডেন-মোদির হাসিমুখের ছবির পেছনে তখন চাপা পড়ে যাচ্ছিল এই বিস্ফোরক বার্তা। বাইডেন বলছিলেন, গণতন্ত্র তাদের ডিএনএ-তে, আর মোদি বলছিলেন ভারত একটি বৈষম্যবিহীন দেশ যেখানে সংবিধান সকল নাগরিকের অধিকার রক্ষা করে।

কিন্তু এই কথার আড়ালেও ছিল এক অন্য বাস্তবতা। একই দিনে বাইডেন হাতে পেয়েছিলেন ৭৫ জন মার্কিন কংগ্রেস সদস্যের স্বাক্ষরিত একটি চিঠি, যেখানে মোদির সঙ্গে বৈঠকে মানবাধিকার ও ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা তোলার অনুরোধ ছিল স্পষ্টভাবে।

মোদি সংবাদ সম্মেলনে দৃঢ় ভাষায় বলেন, ভারতে কোনও বৈষম্য নেই, আমাদের গণতন্ত্র সফলভাবে কাজ করছে। প্রশ্নোত্তর পর্ব ছিল আগেই ঠিক করা—তাতে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল এই বক্তব্যও পূর্বপরিকল্পিত। তবু মোদি ছিলেন আত্মবিশ্বাসী।

কিন্তু আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম তখন গর্জে উঠেছে। সিএনএন, বিবিসি, নিউ ইয়র্ক টাইমস থেকে শুরু করে এনডিটিভি—সব জায়গাতেই শিরোনাম এক: ওবামার হুঁশিয়ারি—“ভারত যদি সংখ্যালঘুদের অধিকার নিশ্চিত না করে, তবে দেশটি ভেঙে পড়তে পারে।”

ভারতে মানবাধিকার লঙ্ঘন, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ, মুসলিম ও দলিতদের বিরুদ্ধে সহিংসতা—এসব অনেক পুরনো অভিযোগ। কিন্তু ওবামার মতো উচ্চ পর্যায়ের এক বিশ্বনেতার মুখে এমন স্পষ্ট বক্তব্য এই প্রথম।

এই মন্তব্য কেবল ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিই না, প্রশ্ন তোলে ভারত-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক নিয়েও—যুক্তরাষ্ট্র কি কৌশলগত স্বার্থের জন্য ভারতের মানবাধিকার পরিস্থিতিকে উপেক্ষা করবে?

ভারতের রাজনীতিতেও এই মন্তব্য ঘূর্ণিঝড় তোলে। বিজেপি-পন্থীরা একে বিদেশি হস্তক্ষেপ বলে নিন্দা করে, অথচ বিরোধীরা বলেন—অবশেষে তাদের কণ্ঠ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রতিধ্বনিত হয়েছে।

হোয়াইট হাউসের আলো নিভে গেলেও, সংবাদমাধ্যমের পর্দায় আলো জ্বলে ওঠে। মোদির এই সফর কাগজে-কলমে সফল বলা গেলেও, ওবামার একটি বাক্য যেন অন্ধকারে ছুড়ে দেওয়া এক জ্বলন্ত সতর্কবার্তা।

এখন ২০২৫ সাল। ভারতের ভেতরে চলছে সংখ্যালঘুদের ওপর দমন-পীড়ন, বাইরে প্রতিবেশীদের সঙ্গে টানাপোড়েন।

তাহলে কি ওবামার ভবিষ্যদ্বাণী সত্যি হতে চলেছে? ভারত কি সত্যিই টুকরো টুকরো হবার পথে?

সোহাগ/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ