সদ্য সংবাদ
৯৯% মুসলমানদের দেশে এবার পশু কোরবানি নিষিদ্ধ

ঈদুল আজহা—মুসলমানদের জন্য ত্যাগের প্রতীক, আর সেই উৎসবেই এবার পশু কোরবানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে উত্তর আফ্রিকার দেশ মরক্কো। দেশটির রাজা মোহাম্মদ পঞ্চম সম্প্রতি এক রাজকীয় ডিক্রির মাধ্যমে এ সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। ৪ জুন রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে এই নির্দেশনা পড়ে শোনান ইসলাম বিষয়ক মন্ত্রী আহমেদ তৌফিক।
বিশ্বের বিস্ময় জাগানো এই সিদ্ধান্ত এসেছে এমন এক দেশ থেকে, যার ৯৯ শতাংশ জনগণ ইসলাম ধর্মাবলম্বী। কেন এই ব্যতিক্রমী নির্দেশ? এর পেছনে রয়েছে একাধিক বাস্তবিক কারণ।
দীর্ঘদিনের খরা ও পশুর সংকট
গত ছয় বছর ধরে মরক্কো ভয়াবহ খরার কবলে। বার্ষিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ গড়ে ৫৩ শতাংশ কমে গেছে, আর তাতে সরাসরি প্রভাব পড়েছে কৃষি ও পশুপালন খাতে। বিশেষ করে ভেড়ার সংখ্যা গত এক দশকে ৩৮ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। খাদ্য ও পানির ঘাটতিতে গবাদিপশু পালন কঠিন হয়ে পড়েছে, কমেছে মাংস উৎপাদনও। এসব কারণে কোরবানির পশু সংকট তৈরি হয়েছে এবং দেশের খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে।
সরকার জানিয়েছে, যেসব পশু এখনও অবশিষ্ট রয়েছে, সেগুলো রক্ষায় ও কৃষি খাতের ভারসাম্য রক্ষায় এবারের ঈদে কোরবানি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আদেশ অমান্যে কঠোর ব্যবস্থা
সরকারি এই নির্দেশ যাতে অমান্য না হয়, সেজন্য বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা নজরদারি। গঠন করা হয়েছে বিশেষ তদারকি দল, যারা পশুর পরিবহনসহ নানা পর্যায়ে নজর রাখছে। কেউ আদেশ অমান্য করে পশু কোরবানি করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর জরিমানা ও পশু জব্দের ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে।
কৃষকদের ক্ষোভ ও উদ্বেগ
তবে এই সিদ্ধান্তে চরম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষকরা। মরক্কোর একটি কৃষি সংগঠনের প্রধান আব্দেল ফাত্তাহ আমের জানিয়েছেন, অনেক কৃষক ঈদ সামনে রেখে পশু প্রস্তুত করেছিলেন। খরার মধ্যেও তারা ক্ষতি কাটিয়ে উঠার আশা করছিলেন কোরবানির বাজারে বিক্রি করে। কিন্তু হঠাৎ কোরবানি নিষিদ্ধ করায় তারা এখন বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে।
তিনি সরকারের কাছে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জন্য ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন।
জনমত: বিরোধ ও সমর্থন—দুই-ই
এদিকে সামাজিক মাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, যেখানে দেখা গেছে নিরাপত্তা বাহিনী বাড়িতে গিয়ে মানুষের কেনা ভেড়া জব্দ করছে। এই ভিডিও সাধারণ মানুষের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। অনেকেই বলছেন, তারা এই সিদ্ধান্ত মানবেন না এবং ধর্মীয় দায়িত্ব পালনে পশু কোরবানি করবেন।
একদল মানুষ মনে করছেন, এই সিদ্ধান্ত ধর্মীয় রীতিতে সরকারের হস্তক্ষেপ। আবার অন্যদল বলছেন, পরিবেশ ও অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় এটি সময়োপযোগী পদক্ষেপ।
কোরবানির ঐতিহ্য ও নতুন বাস্তবতা
ইসলামে ঈদুল আজহার কোরবানি হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর আত্মত্যাগের স্মরণে পালন করা হয়। মরক্কোর এই সিদ্ধান্ত সেই ঐতিহ্যে সরকারি হস্তক্ষেপের প্রশ্ন তুলেছে। তবে বর্তমান বাস্তবতায় সরকার চাচ্ছে সীমিত সম্পদ ও কৃষি-অর্থনীতিকে রক্ষা করতে।
একদিকে ধর্মীয় আবেগ, অন্যদিকে বাস্তব সংকট—এই দ্বন্দ্বের মাঝখানে পড়ে মরক্কো আজ একটি কঠিন সময়ে দাঁড়িয়ে।
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- লাফিয়ে কমে গেল জ্বালানি তেলের দাম
- বিএনপির দুইটি বিষয়ে সম্মতি মিললেই ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন সম্ভব
- সরকারি চাকরিজীবীদের সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন কত টাকা বেতন বাড়লো
- হঠাৎ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য জরুরি নির্দেশনা
- দেশের বাজারে আজ ১৮, ২১, ২২ ক্যারেট সোনার দাম
- পাসপোর্ট মিলবে না এই তিন শ্রেণির ব্যক্তিকে
- ১ জুলাই থেকে সরকারি কর্মীদের জন্য বিশেষ প্রণোদনা: কোন গ্রেডে কত পাবেন
- বাংলাদেশের বাজারে আজ ১ ভরি সোনার দাম
- এই ৪টি নিদর্শন থাকলে বুঝে নিন—আল্লাহ আপনাকে ভালোবাসেন!
- তেহরান খালি করার ডাক দিলেন ট্রাম্প, উঠছে নানা প্রশ্ন
- বাংলাদেশে বৃষ্টির আমেজ: দীর্ঘ তাপপ্রবাহ শেষে স্বস্তির বার্তা
- বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধীসহ সব ভাতা বাড়ছে
- বিএনপির মনোনয়ন পেতে তিনটি প্রধান যোগ্যতা অপরিহার্য
- বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে ১-৩ লক্ষ টাকা রাখলে মাসিক কত লাভ পাবেন
- কালো জাদু: বাস্তব নাকি ভ্রম!