সদ্য সংবাদ
১২৫ বছর পর টাইটানিক নিয়ে চমকপ্রদ তথ্য প্রকাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: ইতিহাসের সবচেয়ে করুণ জাহাজ দুর্ঘটনা টাইটানিক ট্র্যাজেডিকে ঘিরে ১২৫ বছর পর সামনে এলো নতুন ও বিস্ময়কর তথ্য। আধুনিক থ্রিডি প্রযুক্তির মাধ্যমে জাহাজটির সম্পূর্ণ ডিজিটাল স্ক্যান তৈরি করা হয়েছে, যা প্রথমবারের মতো পরিষ্কারভাবে দেখিয়েছে—কীভাবে টাইটানিক ধীরে ধীরে সমুদ্রে ডুবে যায়।
১৯১২ সালের এপ্রিলে উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরে এক বিশাল বরফখণ্ডের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে ডুবে যায় বিলাসবহুল এই জাহাজ। প্রাণ হারান প্রায় ১,৫০০ যাত্রী। এই দুর্ঘটনার অনেক কিছুই এতদিন রহস্যে ঢাকা ছিল, যা এবার প্রকাশিত হলো বিশদভাবে।
এই গবেষণা প্রকল্পটি পরিচালনা করেছে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক ও আটলান্টিক প্রোডাকশন। প্রজেক্টটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘টাইটানিক: দ্য ডিজিটাল রিজেকশন’। পানির নিচে কাজ করার সক্ষম একটি বিশেষ রোবট ব্যবহার করে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩,৮০০ মিটার গভীরে থাকা টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের ৭ লক্ষেরও বেশি ছবি তোলা হয়। এই ছবিগুলোর ভিত্তিতে তৈরি করা হয় একটি ভার্চুয়াল রেপ্লিকা বা ‘ডিজিটাল টুইন’।
নতুন তথ্য অনুযায়ী, শুধু বরফখণ্ডের আঘাতে নয়, বরং একাধিক দুর্বল জায়গা দিয়ে পানি প্রবেশ করেছিল। একটি পোর্টহোল ভেঙে বরফ সরাসরি কেবিন পর্যন্ত চলে আসে। স্ক্যানিংয়ে জাহাজের বয়লার রুমের অবস্থাও দেখা গেছে, যা প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনার সঙ্গে হুবহু মিলে গেছে।
গবেষণায় দেখা যায়, জাহাজটি ডুবে যাওয়ার শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ইঞ্জিনিয়াররা চেষ্টা করেছিলেন বিদ্যুৎ ও আলো সচল রাখতে। বয়লারগুলো কার্যকর ছিল একেবারে ডুবে যাওয়ার আগ পর্যন্ত, যা ডিজিটাল মডেলেও প্রতিফলিত হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি শুধু একটি প্রযুক্তিগত অর্জন নয়, বরং সমুদ্র ইতিহাসে এক যুগান্তকারী অনুসন্ধান। এই গবেষণা ভবিষ্যতে সমুদ্র নিরাপত্তা, জাহাজ নির্মাণ এবং উদ্ধার তৎপরতা বিষয়ক গবেষণার জন্য এক অনন্য দলিল হয়ে থাকবে।
২০২৩ সালে বিবিসি প্রথম এই স্ক্যান ও গবেষণার খবর প্রকাশ করে, যা বিশ্বজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সোহাগ/